কলেজ পরিচিতি ঃ
১৯৬৭ সালের জুলাই মাসে কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলেও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১২ই আগস্ট, ১৯৬৭। শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী, জনদরদী ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গের তথা সোনাতলাবাসীর উদগ্র আগ্রহ ও অকৃত্রিম প্রচেষ্টা, ঐকান্তিক মনোবল, উচ্চশিক্ষার প্রতি গভীর অনুরাগের ফলে ঐতিহাসিক গড়ফতেহ্পুর গ্রামের ছায়া সুনিবিড় প্রাকৃতিক শোভামন্ডিত স্থানে “সোনাতলা কলেজ”নামে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজটি। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অত্র এলাকার সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারের শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব ও দানবীর মরহুম সৈয়দ নূরুল হুদা পৈত্রিক ভিটামাটিসহ ১৯ বিঘা সম্পত্তি দান করেন। তাঁর কনিষ্ঠ বোন হোসনে আনোয়ারা সুফিয়া বানু এবং জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা মরহুম সৈয়দ নজমুল হুদার অংশ একত্র করে দানপত্রে দলিল মূলে কলেজকে হস্তান্তর করে তিনি যে মহানুভবতার পরিচয় দেন, তা নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয়। পরবর্তীতে মরহুম সৈয়দ নূরুল হুদার পিতা মরহুম সৈয়দ নাজির আলী ও মাতা মরহুমা আখতারুন্নেছার নামানুসারে স্মৃতি রক্ষার্থে “সোনাতলা নাজির আখতার কলেজ” নামকরন করা হয়।
অত্র এলাকার সচেতন ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গকে সাথে নিয়ে কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাবেক পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সম্মানিত সদস্য (এমপিএ) মরহুম আব্দুল হামিদ খাঁন। পরবর্তীতে বাবু নারায়ণচন্দ্র বিহানী, শেরপুর কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মরহুম মহসীন আলী দেওয়ান, মরহুম হাজী আব্দুল কুদ্দুস,মরহুম আবুল কাসেম (প্রাক্তন চেয়ারম্যান), জনাব সামসুল হক খাঁন,একেএম বদরুল আলম (অগ্রণী ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার), জনাব আব্দুল লতিফ সরকার,মরহুম আব্দুল লতিফ আকন্দ (মহিমাগঞ্জ), সোনাতলা হাইস্কুলের হেড মাস্টার মরহুম আব্দুল হামিদ,শরীরর্চচা শিক্ষক জনাব আব্দুল হামিদ,জনাব কুতুব উদ্দীন মাস্টার এবং কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ জনাব একেএম ফজলে রাব্বি,তৎকালীন একাউন্টেন্ট সালজার রহমান,মরহুম জালাল উদ্দিন আকন্দ,বগুড়া মহুকুমা প্রশাসক জনাব ইসরাইল হক এবং জেলা প্রশাসক জনাব খানে আলম খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া দেশ স্বাধীনের পর কলেজের সার্বিক উন্নয়নের জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদশে সরকারের মাননীয় সংসদ সদস্যবৃন্দের আর্থিক সহযোগিতায় কলেজের অবকাঠামোগত উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন। কলেজ প্রতিষ্ঠার পর কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য জনাব শামসুজ্জোহা মনির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিগেডিয়ার (অব.) জনাব সাখাওয়াতুল বারী কলজেকে ১৩৭-শিক্ষা বেসরকারী কলেজ উন্নয়ন পরিকল্পনাভূক্ত করার ফলে কলেজে বিজ্ঞান ভবন নির্মান করা সম্ভব হয়। উক্ত উন্নয়ন কাজে জনাব শামসুজ্জোহা মনি, জনাব মরহুম ডাক্তার হবিবর রহমান এমবিবিএস,জনাব শামসুল হক খান,জনাব ডাঃ হবিবর রহমান (চকনন্দন) প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ অক্লান্ত পরিশ্রম করেন । কলেজের সার্বিক উন্নয়নে অনেক সম্মানিত ব্যক্তিত্ত্ব বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। স্বল্প পরিসরে তাদের নাম উল্লেখ করা সম্ভব হলো না বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তবে কলেজের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস সংকলন প্রকাশ পেলে অবশ্যই তাদের নাম শ্রদ্ধার সাথে উল্লেখ করা হবে । তবে কলজেটিকে দ্রুত জাতীয়করনের ক্ষেত্রে যিনি একক কৃতিত্বের দাবীদার তিনি হলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ.এম.এরশাদের স্টাফ অফিসার জনাব কর্ণেল সালজার রহমান। তাঁরই সক্রিয় প্রচেষ্টায় কলেজের সরকারি অনুদান বৃদ্ধি ও দোতলা ভবন নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ সম্ভব হয়ছে। তাঁর এ অবদানরে জন্য সোনাতলাবাসীর নিকট তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবনে।বেসরকারি পর্যায়ে কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ জনাব একেএম ফজলে রাব্বি, মরহুম আব্দুল মতিন চৌধুরী,জনাব ইসরাইল হোসেন সরকার অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে সরকারি নাজির আখতার কলেজ হিসাবে সরকারিকরন করা হয়। এখানে একটি প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন ও অনার্স ভবন আছে। ২০১৫ সালে মাননীয় সংসদ সদস্য জননেতা আব্দুল মান্নানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলা, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞানসহ মোট ৬টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। ফলে অত্র এলাকার মানুষের উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় ২০২২ সালে বিজ্ঞান শিক্ষার সম্প্রসারণের জন্য ৬তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন আধুনিক ভবন নির্মিত হয়ছে। কলেজের ছায়া সুনিবিড় পরিবেশের আকর্ষণ হলো বড় খেলার মাঠ ও একটি সুবিশাল পারুল গাছ। গাছটি বাংলাদেশে প্রাপ্ত একমাত্র পারুল গাছ।